📰 শিরোনাম:
সংকটের কিনারে বাংলাদেশ: রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক দুর্বলতার যৌথ আঘাত
✍️ সম্পাদকীয় প্রতিবেদন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
তারিখ: ২০ জুলাই ২০২৫
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট ক্রমশ উদ্বেগজনক রূপ ধারণ করছে। সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের অবিশ্বাস, পরস্পর দোষারোপ, এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একদিকে বিরোধী রাজনৈতিক জোট একাধিকবার আন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে; অন্যদিকে সরকারপক্ষ বলছে, সংবিধান মেনেই তারা এগোবে। এই টানাপোড়েন এখন রাজপথে সহিংসতার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের তুলনায় অনেক বেশি চাপের মুখে। ডলার সংকট, ব্যাংক খাতে অস্বচ্ছতা, এবং বৈদেশিক ঋণের বোঝা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে চরমভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। একদিকে আয় সীমিত, অন্যদিকে খরচ বাড়ছে—ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো দিশেহারা।
বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করার মতো শিল্প ও রপ্তানি খাতেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নীতিগত স্বচ্ছতা ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ কঠিন।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার সরাসরি প্রভাব পড়ছে সামাজিক জীবনেও। বেকারত্ব বেড়েছে, প্রশিক্ষিত তরুণরা বিদেশমুখী, এবং মাদক-সহিংসতা-নারী নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিকভাবে মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়ছে রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে। মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতিও উদ্বেগজনক।
এমন চলমান অস্থিরতা ও দুর্বল অর্থনীতির পটভূমিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঘোলাটে হতে পারে। রাজনৈতিক সংঘাত বাড়লে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যেতে পারে, রেমিট্যান্স হ্রাস পেতে পারে, এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্বল হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সময় থাকতে ব্যবস্থা না নিলে এই অবস্থা গণতন্ত্রের স্থবিরতা ও অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের দিকে দেশকে ঠেলে দিতে পারে।
১. জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ করা — সরকার ও বিরোধী উভয়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে সমঝোতা। ২. নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে আস্থা ফিরিয়ে আনা — প্রয়োজনে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নজরদারি। ৩. অর্থনীতিতে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা ও দুর্নীতি রোধ করা — ব্যাংক খাত, শেয়ারবাজার ও আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। 4. তরুণ সমাজকে কাজে লাগানো ও মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ আজ এক সংকটময় সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এই মুহূর্তে প্রয়োজন দূরদর্শী নেতৃত্ব, সমঝোতার রাজনীতি এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা। না হলে আজকের সংকট কাল হতে পারে একটি জাতীয় বিপর্যয়ের কারণ।
🟢 সম্পাদকীয় পরামর্শ:
“বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় এখনই সময়—দায়িত্ববান হয়ে উঠুন সব পক্ষ। কারণ ভবিষ্যৎ ইতিহাস এই সময়টিকে স্মরণ করবে—কে কী করলো, আর কে করলো না।”